ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মসজিদ রোড এলাকায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানে জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিসহ দুটি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। গতকাল বুধবার (১ জুন) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের দখল হয়ে যাওয়া প্রায় ২৫ শতক জমি।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নুসরাত জাবীন এই অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ ও সেনা সদস্যরাও অংশ নেন।
জানা গেছে, ওই জমিটি দীর্ঘদিন ধরে জেলা চেম্বার অব কমার্সসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দখলে ছিল। মামলার রায়ে জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে লীলাময় ভট্টাচার্যের পক্ষে আদালত রায় দেন। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের আওতায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর উচ্চ আদালতের আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে সরকার যে জমিগুলো লিজ দিয়েছিল, তার একটি অংশ ছিল এ ২৪.৮৯ শতক জায়গা। যা চেম্বার অব কমার্সসহ কয়েকজনকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। তবে লীলাময় ভট্টাচার্য ২০১২ সালে মালিকানা দাবি করে মামলা করেন। ২০১৬ সালে জেলা জজ আদালত তার পক্ষে রায় দেন। পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালতের রিভিউ এবং আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তও ওই রায়ের পক্ষে যায়।
অভিযান চলাকালে চেম্বারের ভেতরে থাকা দোকানিদের মালামাল সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা মালামাল সরানোর পর উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তবে কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, তাদের কোনো প্রকার পূর্ব নোটিশ প্রদান করা হয়নি। তারা আরও জানান, চেম্বার থেকেও তাদের কিছু জানানো হয়নি।
জমির মালিক নির্মল ভট্টাচার্য বলেন, “এটি আমাদের পূর্বপুরুষদের সম্পত্তি। দীর্ঘদিন ধরে এটি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে গণ্য ছিল। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের জমির মালিকানা ফিরে পেয়েছি।”
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাবীন বলেন, “আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ীই এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। জমিটি পূর্বের মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করার সুযোগ না থাকায় জেলা প্রশাসন বাধ্য হয়েই এ রায় কার্যকরের পদক্ষেপ নেয়।