150

কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে আহত চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি

স্টাফ রিপোর্টার: বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যার ঘটনায় সারাদেশে যখন ছাত্রলীগ নিয়ে নেতিবাচক আলোচনার তোলপাড় চলছে তখনই নির্যাতনের শিকার অসহায় কলেজ ছাত্রের পাশে দাঁড়ালেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল। আহত কলেজ ছাত্রের চিকিৎসাসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল থেকে নিজ উদ্যোগে ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে কলেজ ছাত্র ইয়াসিন আহমেদকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ইয়াসিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও নবীনগর উপজেলার বিটঘর গুড়িগ্রামের মৃত বাসির মিয়ার ছেলে।
ইয়াসিনের সহপাঠি হাবিবুর রহমান জুয়েল জানান, ইয়াসিন ও আমরা কয়েকজন শহরের কলেজপাড়ায় নারগিস ভবনের তৃতীয় তলায় মেস করে থাকি। সোমবার রাতে মেসের ২৭০ টাকা বিদ্যুৎ বিল নিয়ে নারগিস ভবনের মালিক মঞ্জুর হোসেন (৬০) এর সাথে ইয়াসিনের তর্ক হয়। রাতে আমরা খেতে বসার পর বাসার মালিকের ছোট ছেলে ইয়াসিনকে তাদের ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর মঞ্জুর হোসেন, তার স্ত্রী নারগিস বেগম, দুই ছেলে ও বাইরের দুই যুবক মিলে ইয়াসিনকে চেয়ার দিয়ে আঘাত করাসহ পেটে, মুখে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি-লাথি মেরে গুরুতর আহত করেন। আমরা বুঝতে পেরে তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। খবর পেয়ে বুধবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল সদর হাসপাতালে এসে ইয়াসিনের অবস্থার অবনতি দেখতে পেয়ে তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থার দায়িত্ব নেন। জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাসপাতালে ইয়াসিনকে দেখতে এসেছে শুনে মঞ্জুর হোসেন হাসপাতালে এসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। এসময় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ তার কর্মীরা মঞ্জুর হোসেনকে আটক করে পুলিশে তুলে দেন।

জেলা সদর হাসপাতালে উপস্থিত ইয়াসিনের নানী রেহেনা বেগম বলেন, ছোটবেলায় ইয়াসিনের বাবা-মা দুজনই মারা গেছে। আমি নিজ সন্তানের মতো নাতিকে অনেক কষ্টে লালন-পালন করে এসএসসি পাশ করিয়ে শহরে পাঠিয়েছি। আমাদের সংসারের সকলের ভবিষ্যৎ মেধাবী নাতিকে পশুর মতো বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। আমরা মঞ্জুর হোসেন এর কঠোর বিচার চাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল জানান, মধ্যযুগীয় কায়দায় কলেজ ছাত্র ইয়াসিনকে পিটানো হয়েছে। এ খবর পেয়েই আমি হাসপাতালে ছুটে এসেছি। এ ঘটনায় সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের সভাপতি হিসাবে সাধারণ, নিরীহ ছাত্রের পাশে দাঁড়ানোই আমার দায়িত্ব মনে করেছি। আমরা চাই ইয়াসিনের পিটানোর ঘটনায় মঞ্জুর হোসেনকে আইনের আওতায় কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হউক। আমরা ইয়াসিনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো, তার পাশে থেকে নির্যাতনকারীদের শাস্তির জন্য লড়াই করবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.সেলিম উদ্দিন জানান, আমরা খবর পেয়েই মঞ্জুর হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন