
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কুমিল্লা বিভাগের ২৪টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসন থেকে দলটির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেক্রেটারি আলহাজ্ব মাওলানা গাজী নিয়াজুল করিম।
কে এই মাওলানা নিয়াজুল করিম?
মাওলানা গাজী নিয়াজুল করিম ১৯৭৬ সালে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মলাই মিয়া সর্দার ছিলেন এলাকার খ্যাতনামা শালিসকারক। তাঁদের পরিবার ঐতিহাসিক শালগাঁও কালিসীমার দুলা গাজীর বংশধর।
শিক্ষাজীবন
প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন বিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে দক্ষিণ জগৎসার ইসলামিয়া ইয়াকুবিয়া মাদরাসা, চান্দপুর মিফতাহুল উলূম, পটিয়া মাদ্রাসা ও জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স সমমান) সম্পন্ন করেন। বর্তমানে জামিয়া ইউনুছিয়ার মুহতামিম পীরে কামেল মুফতি মুবারকুল্লাহ সাহেবের খলিফা ও খানকায়ে মুবারাকা ইসলাহী কেন্দ্র পরিচালনা করছেন।
কর্মজীবন
ধর্মীয় শিক্ষা ও সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন মসজিদে ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘বাইতুল করীম মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যবসায়িকভাবেও তিনি সক্রিয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের রাধিকা চৌমুহনীতে রয়েছে তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘নাজাহ্-নাজিবা এন্টারপ্রাইজ’।
রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা
১৯৯৩ সালে চরমোনাই পীর সৈয়দ ফজলুল করীম (রহ.)-এর হাতে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। এরপর জেলা প্রচার সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সেক্রেটারির দায়িত্ব পান। বর্তমানে তিনি একই দায়িত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উলামা ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারিও তিনি।
তিনি অতীতেও নির্বাচন করেছেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০১১ সালের উপ-নির্বাচনে “হাতপাখা” প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
আন্দোলন ও সংগ্রাম
২০০১ সালে হাইকোর্টের ফতোয়া বিরোধী রায়ের প্রতিবাদে ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতিত হন। ২০২১ সালে মোদী বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হন এবং প্রায় ৭ মাস কারাভোগ করেন।
সমাজসেবায় অবদান
তিনি সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের শালিশ বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকার বিভিন্ন সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আস্থা অর্জন করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়ন, দলটির কর্মী-সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা তৈরি করেছে।