হরিপুর (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পার হলেও ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ১৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার নেই। জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শিক্ষার্থীদের কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেই, যা নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
হরিপুর উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ১৮৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাধারণ কলেজসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৭টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে, যা বেশিরভাগই জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১১০টির মধ্যে মাত্র ১০টিতে শহীদ মিনার আছে, বাকিগুলোতে নেই।
২০১৬ সালে উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে আমাই দিঘীর পাড়ে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে একটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়, যেখানে উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলাদা শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের ভেতরেই শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছে না, যা ভাষা আন্দোলনের চেতনা বিকাশে একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল ও ভাষা আন্দোলনের অনুরাগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা অত্যন্ত জরুরি।
হরিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রায়হানুল ইসলাম মিঞা এবং প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান সালাহ উদ্দিন জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।