হরিপুরে মসলার দাম ঊর্ধ্বমুখি, স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে

24
সবজির বাজার
print news

হরিপুরে মসলার দাম ঊর্ধ্বমুখি, স্বস্তি ফিরেছে সবজিতে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে শীতের আগাম সবজি বাজারে সরবরাহ বাড়লেও মসলার বাজারে দেখা দিয়েছে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ, রসুন ও কাঁচামরিচের দাম বেড়ে গেছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের কষ্ট বাড়িয়েছে। অন্যদিকে শীতের সবজি বাজারে আসায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছে ভোক্তারা।

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে মসলার বাজারে ঊর্ধ্বগতি

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কালিগঞ্জ, বটতলী, ভাতুরিয়া, কাঁঠালডাঙ্গী ও হরিপুর নতুন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মসলার দামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৬০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ৭৫ টাকা এবং রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা প্রতি কেজি দরে।

বাজারে ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্য পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিও মসলার দামের ঊর্ধ্বগতিতে ভূমিকা রাখছে। তারা আশা করছেন, সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম আবার কমে আসবে।

সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজারে স্বস্তির হাওয়া

অন্যদিকে, সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। শীতের আগাম সবজি যেমন—আলু, মুলা, কচু, শসা, পটল, ঢেঁরশ, ফুলকপি, করলা, লাউ ও চিচিংগার সরবরাহ বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, ঢেঁরশ ও পটল ৪০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, ছোট করলা ৬০ টাকা, বড় করলা ৭০ টাকা এবং প্রতি পিস লাউ ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অভিমত

স্থানীয় ক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, “সবজির দাম এখন কিছুটা কমেছে, এটা আমাদের জন্য স্বস্তির খবর। তবে পেঁয়াজ আর মরিচের দাম আবার বেড়েছে, এতে বাজারে ভারসাম্য থাকছে না।”

অন্য এক ক্রেতা রওশনারা বেগম বলেন, “রান্নায় মসলার প্রয়োজন বেশি, কিন্তু এখন মসলার দাম অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিদিনের খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে।”

সবজি বিক্রেতা আমিনুল হক জানান, আগাম শীতের সবজি আসায় বাজারে পণ্যের চাপ বেড়েছে। ফলে দাম কিছুটা কমেছে। “আগামী সপ্তাহে আরও সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমতে পারে,” বলেন তিনি।

আগাম শীতের ফসল ও বাজারের প্রভাব

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা জানান, “এ বছর বৃষ্টিপাত অনুকূলে থাকায় আগাম সবজি উৎপাদন ভালো হয়েছে। ফলে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির বার্তা।”

সরকারি তদারকি ও ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা

তবে মসলার বাজার স্থিতিশীল করতে ব্যবসায়ীরা সরকারের সহায়তা ও সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন চান। পাইকারি পর্যায়ে আমদানি বাড়লে এবং পরিবহন খরচ কমলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে বলে তারা মনে করেন।

এদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাজারে যাতে অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি না ঘটে সেজন্য নিয়মিত তদারকি চালানো হচ্ছে। তারা ক্রেতাদের সতর্ক থাকতে এবং দাম নিয়ে অনিয়ম দেখলে অভিযোগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

সব মিলিয়ে, হরিপুরে বর্তমানে মসলার দাম ঊর্ধ্বমুখি হলেও আগাম শীতের সবজি বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে ক্রেতারা পেয়েছেন কিছুটা স্বস্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহরিপুর সীমান্তে আটক ৫ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ
পরবর্তী নিবন্ধহরিপুরে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন